Tuesday, September 07, 2010

তারকামেলা

তারকামেলা

কেমন পাত্র চাই?
এখন বিয়ের মৌসুম। শানাইয়ের সুর বাজছে চারদিকে। জীবনে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করছেন অনেক তরুণ-তরুণী। তেমনি এ দিনের অপেক্ষায় আছেন আমাদের শোবিজ তারকাদের অনেকেই। আর দশটা বাঙালি নারীর মতোই সুন্দর সংসার জীবনে প্রবেশের স্বপ্নের জাল বুনেন আমাদের মিডিয়ার নারী তারকারাও।

কেমন পাত্র চান তারা? প্রতিটি তরুণ বা তরুণীর জীবনে এমন একটি সময় আসে যখন কল্পনার মানসপটে প্রত্যেকেই একজনের ছবি আঁকেন। আর সেই কল্পনার মানুষটি যখন বাস্তবে এসে ধরা দেয়, তখন আনন্দের আর সীমা থাকে না।

তবে মনের এই মানুষটিকে একান্তে পাওয়ার জন্য সামাজিক অনেক নিয়মের পথ ধরেই হাঁটতে হয় সবাইকে। একই বৃত্তে দুটি জীবনের মিলেমিশে একাকার হয়ে যাওয়ার অপর নাম বিয়ে। আর বিয়ে হলো নারী পুরুষের একসঙ্গে থাকার অনুমতি পাবার একটি সামাজিক চুক্তি।

এই কিছুদিন আগেও যে তরুণ বা তরুণী বন্ধুদের সঙ্গে নানা গালগল্পে মশগুল থেকে বেশ রাত করে বাড়ি ফিরতো, বিয়ের পর থেকেই বেশ খানিকটা পাল্টেছে তার অভ্যাস।

এখন সন্ধ্যার পরই আড্ডা ছেড়ে তাকে বাড়ি ফিরবার উদ্যোগ নিতে দেখা যায়। বন্ধুরা বাধা দিলে মিষ্টি হেসে সে জবাব দেয়, ‘দেরি করে বাড়ি ফিরলে তোদের দুলাভাই বা ভাবী রাগ করে’।
আগে যেখানে দৈনিক বেশ কিছুটা সময় কাটানো হতো বন্ধু কিংবা বান্ধবীদের সঙ্গে, এখন সেখানে নির্ভর করতে হয় স্বামী বা স্ত্রী’র কর্মব্যবস্তার মাঝের অবসর সময়টুকুর উপর। শুধু যে দেরি করে বাড়ি ফিরবার অভ্যাস কিংবা বন্ধু-বান্ধবীদের সঙ্গে ঘুরে বেড়ানোর অভ্যাস তা নয় বরং বিয়ে পরবর্তী যুগল জীবনে অনেক অভ্যাসই পরিত্যাগ করে একে অপরের সঙ্গে নিজেকে বিনে সুঁতোর বন্ধনে আবদ্ধ করে রাখে সারাটি জীবন।

প্রিয় পাঠক, আপনারা হয়তো ভাবছেন হঠাৎ করেই বিয়ে নিয়ে এত কাব্যময়তা কেন? এর কারণ এখন বিয়ে মৌসুম। ষড়ঋতুর এই দেশে শীত মৌসুমেই সাধারণত বিয়ের উৎসব জোরালোভাবে চোখে পড়ে। অন্য দশটা সাধারণ মানুষের মতোই আমাদের মিডিয়া তারকারা তাদের হৃদয় ক্যানভাসে আঁকিবুঁকি করে আঁকার চেষ্টা করেন স্বপ্নের মানুষের ছবি। আমাদের এবারের আলোচনার বিষয় মিডিয়ার আলোচিত নারী তারকারা।

আর তারাও বাঙালি অন্য নারীদের মতোই নিজের পছন্দের পাত্রের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনেন।

প্রিয়জনকে নিয়ে রঙিন স্বপ্ন দেখা ও তাকে নিয়ে নানা ভাবনার মায়াজালে নিজেকে জড়ান তারকাদের অনেকেই।

আমাদের নারী তারকা কেমন পাত্র চান? এ বিষয়ে আমরা কথা বলেছিলাম তাদের সঙ্গে। সময়ের আলোচিত তারকা চিত্রনায়িকা বিন্দুকে দিয়েই শুরু করা যাক।
আমাদের তারকাদের কেউ কেউ স্বদেশী পাত্রকে প্রাধান্য দিলেও এক্ষেত্রে বিন্দু প্রবাসী পাত্রকে তার পছন্দ বলে জানালেন। সুতরাং অবিবাহিত প্রবাসীরা যোগ্যতার আয়নায় নিজেকে দেখুন আপনি বিন্দুর উপযুক্ত কিনা? বর কেমন হবে এমন প্রসঙ্গে বিন্দু বললেন, ‘আমার বয়স এখন ২২ চলছে। আমি চাই ৩৩ বছর বয়সে বিয়ে করতে। হা-হা-হা। আমি চাই আমার বয়সের সঙ্গে পাত্রের ৬ বছরের ব্যবধান থাকুক।’

কণ্ঠশিল্পী মিলা নিজের বর হিসেবে যাকে প্রাধান্য দিবেন তাকে অবশ্যই সুন্দর মনের মানুষ হতে হবে। তিনি মুখে যা বলবেন কাজের সঙ্গে তার মিল থাকতে হবে। মিলার জবানীতে, ‘আমি চাই এমন একজন মানুষ যে আমাকে এবং আমার অনুভূতিগুলোকে সহজেই যেন বুঝতে পারে। শিক্ষিত পাত্র আমার পছন্দের তালিকায় অবশ্যই প্রাধান্য পাবে। আমি বলব না, পাত্রের চোখ সুন্দর, গায়ের রঙ ফর্সা, মাথাভর্তি কালো চুল তা থাকতে হবে।

তবে এই গুণগুলো যদি তার থাকে তাহলে প্লাস।’ দেশের দুই শীর্ষ চিত্রনায়িকা শাবনূর ও পপি পাত্রের অর্থনৈতিক অবস্থাকে বড় করে দেখবেন না বলে জানালেন।

তবে তারা যাদের নিজের জীবনের সঙ্গে জড়াবেন তাদেরকে অবশ্যই স্ত্রীর পছন্দের মর্যাদা দিতে হবে।

পপি ও শাবনূর দু’জনই একই পেশায় কাউকে বিয়ে করতে চান না। তাদের ধারণা স্বামী-স্ত্রী দু’জন যদি একই পেশার হয় তাহলে সংসারে সুখ আসে না।’
কন্ঠশিল্পী তিশমা বলেন,‘আমি এখনো নিজেকে টিনএজ মনে করি। আরো দশ বছর পর বিয়ের পরিকল্পনা করব। তবে আমার বরকে অবশ্যই এডুকেটেড হতে হবে।’ খ্যাতিমান মডেল মোনালিসা নিজের পছন্দের পাত্রের বর্ণনায় বললেন, ‘আমার বর যিনি হবেন তাকে অবশ্যই শিক্ষিত ও মার্জিত হতে হবে। আমি শুধু একাডেমিক শিক্ষার কথা বলছি না। তাকে সবদিক দিয়েই সুশিক্ষিত হতে হবে।

সুন্দর মনের একজন মানুষের সঙ্গেই আমি নিজেকে জড়াতে চাই।’ নোয়াখালী, বরিশাল ও ঢাকাইয়া কুট্টি-পাত্র যে জায়গারই হোক না কেন এটা কোনো সমস্যা মনে করেন না মোনালিসা। তবে একটা জায়গায় তার ঠিকই আপত্তি আছে। মোনালিসা বললেন, ‘পাত্রের মাথায় চুল না থাকলে চলবে না।’ অভিনেত্রী তিশা পাত্রের বিষয়ে তার প্রথম শর্তের কথা নিয়ে বলেন, ‘তাকে অবশ্যই ভাল একজন মানুষ হতে হবে।

দেখা গেল, সে ঠিকই উচ্চশিক্ষিত কিন্তু ভেতরে ভেতরে একজন নিচু মানসিকতার মানুষ, তাহলে চলবে না।
 
আমার বরের অর্থনৈতিক অবস্থা মোটামুটি ভাল হলেই চলবে। বিশেষ কোনো অঞ্চলের পাত্রের প্রতি আমার কোনো দুর্বলতা নেই।’

তিশা চান বরের সঙ্গে তার কমপক্ষে পাঁচ বছর বয়সের পার্থক্য থাকুক। লাক্স সুপারস্টার মম এমন পাত্রকে বেছে নিবেন বলে জানালেন, যে তাকে পুরোপুরি বুঝতে সক্ষম হবে।
একই পেশার কেউ হলে তার কোনো সমস্যা নেই। মম বললেন, ‘আমার বরকে অবশ্যই উচ্চ শিক্ষিত হতে হবে। তবে পাত্র গান গাইতে পারলে ভাল। আমি পরিবারের অমতে বিয়ে করবো না।’ চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাসের পছন্দের তালিকায় সেই মানুষটি আছেন, যিনি তার পেশার প্রতি সম্মান দেখাতে পারবেন। অপু বিশ্বাস বলেন, ‘যে আমার কাজের প্রতি সম্মান দেখাবে না, আমি কোনোভাবে তাকে বিয়ে করবো না।

সুন্দর মনের একজন মানুষ আমার প্রয়োজন। তবে একই পেশার মানুষ হলে ভাল হয়। এতে দু’জন দু’জনের কাজের বিষয়ে ভাল ধারণা রাখবেন। ফলে একজন দেরি করে বাড়ি ফিরলে অন্যজন কোনো আপত্তি তুলবেন না। আমি আমার পরিবারের অমতে বিয়ে করতে চাই না। আমার বয়সের সঙ্গে ৭ বছরের পার্থক্য রয়েছে এমন পাত্রকেই আমি প্রাধান্য দেব। যার উচ্চতা ৬ ফিট আমি তাকে বর হিসেবে গ্রহণ করতে চাই।’

লাক্স তারকা বাঁধন বুদ্ধিমান পাত্রকে অগ্রাধিকার দেবেন বলে জানালেন। চেহারা সুন্দর, হ্যান্ডসাম এসব বিষয়ের চেয়ে পাত্রের ট্যালেন্টটাকেই প্রাধান্য দেবেন তিনি। তবে তিনি পরিবারের অমতে বিয়ে করতে নারাজ। বিবাহিত পাত্ররা সাবধান! ভুলেও কড়া নাড়বেন না বাঁধনের মনের দরজায়। বাঁধন চান পাত্রের উচ্চতা তার চেয়ে কমপক্ষে ৫ ইঞ্চি বেশি হোক।’

0 comments:

Post a Comment